কবিতা গুচ্ছ || নীলাঞ্জনা ভৌমিক




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

ওঠো,জাগো


উন্নত নয় উন্নয়নশীল এক দেশের 

       অভাগা নাগরিক আমি,

দারিদ্র তার সীমা ছাড়িয়ে হয়েছে

      দেশপ্রেমের থেকেও দামী।

প্রযুক্তিতে বিশ্ব জোড়া খ্যাতি আমার

      মাতৃভূমির স্বনির্ভরতা চাই,

অর্থ ঢেলে আবিষ্কার বিক্রি হোক

      চায় না আমার দেশ এই।

হ্যাঁ,শুধু এটুকুই চেয়েছিলাম আমিও

      ধনীর মাথা গেল ঘুরে যে,

আমার ঘরে সাপ ঢুকল সুরঙ্গ দিয়ে

       কি ভয়ঙ্কর বিষধর সে !

আমার ছেলে আজ অস্বাভাবিক 

        স্বাভাবিক হয়েই জন্মেছিল, 

ব্যস্ততার মাঝে খেয়াল করিনি যে

       তারই মূল্য চোকাতে হয়েছিল।

আমি এখনো বেঁচে যে আছি এই ঢের

        যুযুৎসুরা আজো পাণ্ডবদের, 

রক্ষা করে চলে নিঃশব্দে, নিঃস্বার্থে

       শকুনিরা মারতে পারে না তাদের।

বিশ্ব মাঝে শ্রেষ্ঠ আসন পাওয়ার জন্যে 

      অর্থনৈতিক স্বাধীনতা তাই চায়,       

দেশকে স্বনির্ভর হতে হলে কেন তবে

       বেঘোরে আমাদের প্রাণ যায় ?

জেগে ওঠো দেশ ও দেশবাসীগণ

       মাথা নতো কোরো না আর!

জগৎ জোরা অশুভ শক্তির কাছে

      শুভ শক্তির জয় হোক বার বার।

=====

মূল্যায়ন 

               

দেশবাসীর রক্তে ভেসে এসেছে স্বাধীনতা 

ব্রিটিশ শৃঙ্খলমুক্ত ভারত মাতৃরূপে স্থিতা।

কি মূল্য দিয়েছি তোমাকে ! তোমার আশা

খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান আর শিক্ষা- চিকিৎসা।


নির্বাচন আসে,যায় নেতাদের বক্তৃতায়

সরগরম রাস্তাঘাট,গলির আনাচ কানাচ,

হাসে সব্জি বিক্রেতা , হাসে ঐ পাগলটা

চাকরি গেছে তাই মাথায় পড়েছে বাজ।


শুক্ন পাতা সঙ্গী হয় ছাত্রছাত্রীদের স্বপ্ন 

সরকারের কুচক্রের ঘূর্ণিপাকে তারা মত্ত ,

ডিগ্রিগুলো আজ কেবলই ছেঁড়া কাগজ

শিক্ষার অভিমান ভুলে গিয়ে ঘটায় অনর্থ।


জাগব আমরা কবে ? শুনে হাসে মোমবাতি

বলে " আমাকে নিয়ে আর কোরো না খেলা ,

ডুবছে সংসার,ডুবছে সম্মান,ভুগছে রাজ্য -

প্রতিবাদের আগুন জ্বালো যাচ্ছে বয়ে বেলা।

====

স্বাধীনতা ও জনতা


   স্বাধীনতা ! কবে এসেছো তুমি ভারতে?

- ১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্টে।

- আজ কতো সাল ?

- কেন ? ২০২৫।

- প্রায় ৭৮ বছর বয়স হলো তোমার।

- হঠাৎ এ কথা কেন ?

- প্রশ্ন একটা জেগেছে মনে ?

- কি প্রশ্ন ?

- কি পেয়েছি আমরা ? কি পেয়েছে ভারতবর্ষ?

- কত রাস্তা, কত রেস্তোরা,কত ফ্ল্যাট,সপিং কমপ্লেক্স!

- আর চাকরী,শিক্ষা,সংস্কৃতি,শিল্প ?

     স্বাধীনতা চুপ করে থাকে।

- আবার ২০২৬ এ নির্বাচন ! কি লাভ এতে ? বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তৃতা দেবে ,এ ওর গায়ে কাদা ছুড়বে, রাস্তাঘাটে আলোচনা চলবে, অলিগলিতে রাতে গুলিও চলবে।

- যখন নেতারা আসবে তখন তোমাদের সমস্যার কথা বলবে ?

- হাত জোর করে প্রণাম জানাবে , প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেবে। 

- আর তারপর কি হবে ?

- ক্ষমতা পেয়ে গেলে আর আমাদের চিনবে না। জনসাধারণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বন্যার জলেই ভেসে যাবে।

- কি রাজকার্য করে তারা ?

- নিজেদের পকেট ভরতে ব্যস্ত থাকে।

- ভারতের সব রাজ্যেই কি এক অবস্থা ?

- না। কিছু রাজ্য যথেষ্ট সচেতন।

- তোমরা একজোট হয়ে প্রতিবাদ কর !

- করি তো। মোমবাতি জ্বালি,সারারাত জেগে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকি , দিনে রোদে পুড়ি, রাতে বৃষ্টিতে ভিজি, অনশন করি দিনের পর দিন। পাওয়া চাকরি হারিয়ে ফেলি। চোখের জলে ভাসি। কিছুতেই কিছু হয় না। ঠান্ডা ঘরে সব ঘুমায়।

- এতো শোষণ !

- তাই । এইভাবেই চলে জীবন। এইভাবেই বেঁচে আছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ