কবিতা গুচ্ছ || শ্যামল মন্ডল




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

আলো যারা ছড়াতে চেয়েছিল…


তাঁরা চেয়েছিলেন জ্ঞান ছড়াতে,

 আলো দিতে শিক্ষার আলোকে,

 কিন্তু আজ তাঁদের দেখা যায় শুধু

 অন্ধকার রাস্তায়, নীরব কালোকে।


নিয়োগপত্র হাতে, বুকভরা আশা,

 তবুও তাঁরা হলেন বঞ্চিত অসহায়।

 স্বপ্নের স্বাক্ষরে যাঁরা পা রেখেছিলেন,

 আজ রাষ্ট্রের হাতে তাঁরা নিঃস্ব, নিরুপায়।


মেধা ছিল তাঁদের ঢাল ও তরবারি,

 পরিশ্রম ছিল তাঁদের যুদ্ধের পথ,

 তবুও প্রশাসনের এক রুদ্ধ পত্রে

 ভেঙে পড়ল তাঁদের ভবিষ্যতের রথ।


শিক্ষক মানে আশার আলো,

মানবতার দীপ্তি ভালো।

আজ সে আলো কাঁদে নিশি,

সমাজজুড়ে ব্যথার রাশি।

=====

শিক্ষকহীন বিদ্যালয়, ভবিষ্যৎহীন ছাত্র


স্কুলের ঘন্টা বাজে, কিন্তু নেই সুর,

 শ্রেণিকক্ষে পড়ে থাকে কেবল নীরব দূর।

 নেই সেই মুখ, যিনি শেখাতেন ভালোবাসা,

 নেই সেই হাত, যিনি আঁকতেন ভবিষ্যতের ভাষা।


ছাত্র আজ চুপচাপ, অভিভাবক দ্বিধায়,

 কে দেখবে তাদের, কে বুঝবে হৃদয়-ব্যথায়?

 যে শিক্ষক ছিলো অনুপ্রেরণা,

 আজ তাকেই দেখে তারা ছন্নছাড়া।


একদিন যে পা ছুঁয়ে শিক্ষার্থীরা আশীর্বাদ নিতো,

 আজ তাকেই অবহেলার ছায়া ঘিরে রেখেছেতো।

 এই দৃশ্য শুধু একজনের নয়—

 তা গোটা শিক্ষার মর্যাদায় লেপটে রয়।


যেখানে শিক্ষক নেই, সেখানে স্বপ্নও নিভে যায়,

 সেই নিভন্ত চোখে দেশ নিজের ভবিষ্যৎ হারায়।

 শিক্ষকহীন বিদ্যালয় মানে, শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অরণ্যে,

 পথহীন ভবিষ্যৎ—ভাঙ্গা স্বপ্ন জমে নির্জনে।

====

সুবিধাবাদীদের সমাজ


এই সমাজে আছে কিছু

সুবিধাবাদী লোক -

ভালো মানুষকে পাগল

করার দিকেই এদের ঝোঁক !


এরা সকলে মুখোশধারী !

ভালো সেজেই থাকে ,

সরল সাদা মানুষ যত

পড়ে এদের ফাঁদে !


মিথ্যে কথা বলায় এদের ,

জুড়ি মেলা ভার !

এদের সঙ্গে পাল্লা দেয়,

সেই সাধ্য কার ?


অপবাদ আর গঞ্জনা দেওয়া

এদের একটা স্বভাব ;

ধর্ম আর বিবেকবোধের

বড়ই এদের অভাব !

====

ভ্রান্তির মুখোশ


বুদ্ধির নামে ঢেকে আছে ভ্রান্তির মুখ,

 সত্যের আলোয় নিভে গেছে আজকের সুখ।

অল্প জ্ঞানেই চালায় তারা জ্ঞানের কথা,

 মুখে আদর্শ, ভেতরে শুধু লোভের ব্যথা।

শাসন মানে যেন তাদের সেবার ঠিকা,

আসলে ভেতরে পচন, মুখে শুধুই শিখা।

যারা হওয়ার কথা ছিল জাতির মান,

 তারা আজ চাটুকার, বিকোয় বিবেক-জ্ঞান।

সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন আজ মৃত প্রায়,

 আদর্শের বদলে হিসেব-নিকেশ হায়।

তত্ত্বে আজ আর নেই দেশপ্রেমের জ্যোতি,

 ভণ্ডামি আর স্বার্থেই খোঁজে লোকগৌরব-প্রতি।

যুক্তির বদলে আবেগে ভরে মন,

 ভাগ হয় মানুষ, ভাঙে সমাজের বন্ধন।

ইতিহাস ভুলে, অপমান করে সংস্কার,

 নিজেকে চিনে না, মুখোশেই হয় আত্ম-প্রচার।

বিজ্ঞানের পথ ছেড়ে নেয় মায়ার দিশা,

 ভবিষ্যতের নামে বাড়ায় কেবল নিরাসা।

তাদের কথায় সমাজে হয় বিপরীত ধারা,

 কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে সত্য সারা।

তবু আশায় থাকি — উঠুক সত্যের মশাল,

 জেগে উঠুক যারা গড়বে নতুন সমাজকাল।

===

ভোরের মুগ্ধতায় সূর্যোদয়ের স্পন্দন


অবাক এক বিস্ময়!

 নতুন ভোরের আশায়

 সূর্যের উদয় আর দিনশেষে

 পশ্চিমে তা অস্ত যায়।

 প্রতি ভোরে শিশির বিন্দু ঘাসের শীর্ষে

 আর স্নিগ্ধ বাতাস যেন,

 শরীরে স্পন্দন নিয়ে আসে।

 ভোরের সূর্যোদয়ে শক্তি ধরে

 উদ্ভিদপত্র তাহার পত্র মেলে।

 আরো ফোটে প্রতিটি ফুল

 প্রত্যেকের নিজস্ব সৌন্দর্যের আবেশে।

 সূর্য ওঠার গ্রামীণ দৃশ্য যেন

 হার মানায় প্রতিটি বেলাকে

 বেলা তুমি সুন্দর!

 প্রতিটি ভোরের আদলে,

 প্রত্যেক ভোরের অপেক্ষায়,

 ওহে ভোর তুমি এক অবাক বিষ্ময়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ